March 22, 2024, 6:06 pm
ব্রেকিং :

পরের দুই নারীকে বিয়ে না করে সহাবস্থানের চুক্তি করেছিলেন মামুনুল

দেশজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেওয়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে এবার বিস্ফোরক তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক বলেছেন, তিনি পরের দুইজনকে বিয়ে করেননি। তবে দুই জন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে মামুনুলের চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তির কপিও উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, মামুনুল হক তাদের বিয়ে করবেন না। স্ত্রীর মর্যাদাও দেবেন না। তবে তাদের ভরণপোষণ দেবেন। এই শর্তে যে, তিনি স্ত্রীর মতো করে তাদের সঙ্গে মিশবেন। যেখানে যেতে বলবেন, সেখানে যেতে হবে এবং তার সঙ্গে রাত্রিযাপন করতে হবে।

গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, মামুনুল হকের কাছে তারা জানতে চেয়েছিলেন, বিয়ে না করে কারো সঙ্গে চুক্তি করে থাকা যায় কি-না? জবাবে মামুনুল হক তাদের বলেছেন, এই শরীয়ত সম্মত। তিনি স্ত্রীর মর্যাদা না দিলেও তাদের ভরণপোষণ দিচ্ছেন। তার বিনিময়ে তারা তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন। এটা ইসলামের বিধিবিধানের মধ্যেই তিনি করেছেন বলে দাবি করেছেন। তবে এই পরিস্থিতিতে সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টে যাওয়া তার ঠিক হয়নি। আর গেলেও আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে নেতাকর্মীদের জানিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হকের দাবি, জান্নাত আরা ঝর্ণার বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি তার অভিভাবকত্ব নেন। এসময় তিনি জান্নাতকে পূর্ণ স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবেন না এমন মৌখিক শর্তে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন। মামুনুল হকের দাবি, তার শর্ত জান্নাত আরা মেনে নিয়েছিল। দুই বছর ধরে তিনি জান্নাত আরার ভরণ-পোষণ ছাড়াও ব্যবসা করার জন্য মূলধন দিয়েছেন এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে রিসোর্টকাণ্ডের ঘটনারও বর্ণনা দেন। মামুনুল বলেন, ব্যস্ততার কারণে জান্নাতের সঙ্গে তার নয় মাস ধরে দেখা-সাক্ষাত হচ্ছিল না। জান্নাত তাকে সময় দেয়ার জন্য বারবার বলছিল। ৩ এপ্রিল তার বি. বাড়িয়া যাবার কথা ছিল। কিন্তু বি. বাড়িয়া যাওয়া বাতিল হলে তিনি ওই দিন জান্নাতকে নিয়ে কোথাও একটু একান্ত সময় কাটাতে চেয়েছিলেন। ঘটনার দিন সকালে গ্রিন রোডের গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সামনে থেকে জান্নাতকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টের দিকে রওয়ানা দেন তিনি।

স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে কেন বিয়ে করেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, স্ত্রীর মর্যাদা না দেওয়ার শর্ত দিয়েই তিনি বিয়ে করেছিলেন। ইসলামে এটা জায়েজ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর কাছে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ‘শহীদুল ভাইয়ের ওয়াইফ’ বলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামুনুল হক জানান, বিষয়টি জানার পর তার প্রথম স্ত্রী যদি স্ট্রোক বা খারাপ কিছু একটা করে ফেলে সেই আতঙ্ক থেকে মিথ্যা বলেছিলেন তিনি।

তৃতীয় স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লিপিকে বিয়ে করা নিয়েও একই বক্তব্য ছিল মামুনুল হকের। তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা জান্নাতুল ফেরদৌস সম্পর্কে মামুনুল বলেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে একসঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স করার সময় তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর জান্নাতুলের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাকেও স্ত্রীর অধিকার না দেয়ার মৌখিক শর্তে তাকে বিয়ে করেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তার প্রথম স্ত্রী কিছুই জানতেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।



ফেসবুক পেইজ