March 24, 2024, 9:03 am
ব্রেকিং :

আম্পানে কৃষিখাতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি কমলনগর ও রামগতিতে

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় প্রায় ৩শ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা। ক্ষতির শিকার হয়েছেন প্রায় দুই হাজার কৃষক।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে, সয়াবিন, চিনাবাদাম, মরিচ ও গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আগ পর্যন্ত মাঠে দণ্ডায়মান ফসল ছিল প্রায় ৩ হাজার হেক্টর। যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সূত্র জানায়, দুই উপজেলায় সয়াবিন আবাদ করা হয়েছিল প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আগে ৬৪০ হেক্টর জমির সয়াবিন ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি। ফলে ৫০ হেক্টর জমির সয়াবিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ৯ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২১৫ জন।
চিনাবাদাম আবাদ করা হয়েছিল এক হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে। ঘূর্ণিঝড়ের আগে কোনো ফসল ঘরে তোলা সম্ভব না হওয়ায় ১৫০ হেক্টর জমির চিনাবাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ৪৫ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য ২৭ লাখ টাকা। এতে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন ৭০২ জন কৃষক।
গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি (খরিপ-১) আবাদ করা হয় ৬২৫ হেক্টর। যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৭০ হেক্টর জমির। এতে ৪২ মেট্রিক টন শাক সবজি উৎপাদন ব্যাহত হয়ে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৭০০ জন কৃষক।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দুই উপজেলায় প্রায় ৮শ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় ও মেঘনার জলোচ্ছ্বাসে প্রায় ৪০ হেক্টর জমির মরিচ ও গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন মরিচের উৎপাদন ব্যাহত হয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
কমলনগর উপজেলার চরফলকন এলাকার কৃষক মোহাম্মদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ১২০ শতক জমিতে সয়াবিনের চাষ করেছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে সয়াবিন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। এতে গাছ পচে যাওয়ায় অর্ধেকের বেশি ফলন নষ্ট হয়ে গেছে।
একই উপজেলার খায়েরহাট এলাকার বাদাম চাষী মোশারেফ হোসেন জানান, তিনি প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ শতক জমিতে চিনাবাদাম চাষ করেছেন। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেই বাদাম পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
রামগতি উপজেলার চর আব্দুল্লাহ এলাকার কৃষক মো. আবুল কালাম জানান, তার ৪০ শতক জমির মরিচ ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকে মরিচ ও গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তিনি প্রায় ১০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ২৭০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জমির ফসল ও কৃষকদের তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা প্রদান করা হবে।



ফেসবুক পেইজ