April 14, 2024, 6:49 pm

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে কমলনগরে মানববন্ধন

পল্লী বিদ্যুৎ বিলে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
২২ জুন সোমবার দুপুরে উপজেলার প্রদান ফটকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় ভুক্তভোগী হাজার জনতা।
এসময় মানববন্ধনে গ্রাহকরা দাবি করেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষ গৃহবন্দী জীবন যাপন করছেন। কর্মজীবি, দিনমজুর মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে অলস অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। সরকার বিদ্যুৎ বিল, এনজিও গুলোকে কিস্তির বিল নিতে মানা করেছেন। যার পেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিল গ্রাহকরা বিল পরিশোধ করতে পারেনি। লক ডাউন শিতিল করলে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে। কিন্তু দু:খের বিষয় বিল পরিশোধ করারও পর পুর্নরায় পরিশোধিত বিল, বিলম্ব বিলসহ ডাবল বিল গ্রাহকদের নামে দেখায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
তারা জানান, মার্চ এবং এপ্রিল মাসের বিল পরিশোধ করলেও, বকেয়া দেখিয়ে মে মাসের বিলের সঙ্গে তা আবার যোগ করা হয়েছে। জানুয়ারী বা ফেব্রুয়ারী মাসে যে বিল এসেছে এখন তার দ্বিগুন নেয়া হচ্ছে। মিটার রিডিং না দেখেই, অফিসে বসে খামখেয়ালি মতো এ বিল তৈরী করা হচ্ছে।

এসমস্ত ভুয়া-বানোয়াট বিলের রশিদ নিয়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে ভীড় জমালেও মিলছে না কোন সমাধান, বলছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

তারা আরও জানান, যাদের পুরানো বিল নতুন বিলের সাথে যুক্ত হয়েছে। তাদের নানা হয়রানির মধ্যে বিল সংশোধন করা হচ্ছে। যেসব বিল মিটার রিডিং না দেখে খামখেয়ালী মতো করা হয়েছে। সে বিষয়ে কোন সুরাহা করছে না পল্লী বিদ্যুৎ। এতে হয়রানির শিকার গ্রাহকরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।

তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েও কথা বলেন, তারা জানান, লকডাউনের মধ্যে সড়কে যানবাহন না থাকায় ভোগান্তি নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হয়। অফিসে লোকজনেরও অনেক ভিড়। ভিড়ের মধ্যেই বিল সংশোধন করে তা পরিশোধ করতে হয়েছে। করোনা মুহূর্তে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি বা সামাজিক দুরুত্ব। এতে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে বিল পরিশোধে আগত গ্রাহকরা।

মানববন্ধন থেকে বিভিন্ন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা এ সমস্ত অতিরিক্ত বিল, গ্রাহক হয়রানী বন্ধে আহবান জানান। মানববন্ধন শেষে উপজেলা ইউএনও এবং পল্লী বিদ্যুৎ অফিস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয।

পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক মো. মোসলেহ উদ্দিন জানান, লক ডাউনের কারণে বিদ্যুৎ বিল দিতে পারিনি। লক ডাউন শীতিল করার পর বিল পরিশোধ করি। কিন্তু বিল পরিশোধ করার পরও আগের এবং নতুন মাসের বিল তার নামে দেখানো হয়। এতে তিনি খুবই হতাশা প্রকাশ করেন। এছাড়াও প্রতিমাসের তুলনায় বিলও বেশি দেখাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বিদ্যুৎ বিল অতিরিক্ত দেখানো হলে রামগতি বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা কোন সমাধান দেয়নি।পরে লক্ষ্মীপুর জেলা অফিসে যোগাযোগ করলে দীর্ঘদিন হয়রানির পর সমাধান হয়। বিলম্ব বিল পরিশোধ করতে দেরি হলে লাইন কেটে দেয়। এবং দিচ্ছে।

ভুক্তভোগী হাজ্বী মনির জানান, এপ্রিল মাসের বিল আগেই পরিশোধ করেছেন। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত মিটার না দেখে অতিরিক্ত ইউনিটের বিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, মে মাসে ব্যবহৃত ইউনিট দেখানো হয়েছে ৩৯৫ ইউনিট। কিন্তু বাস্তবে ব্যবহার হয়েছে ১০০ ইউনিটের মতো। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে তা সংশোধন করা হয়। এতে তিনি নানা হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হয়েছে।

তাদের মতো বেশ কয়েকজন গ্রাহক ব্যবহারের চেয়ে কয়েকগুণ ইউনিট উঠিয়ে অতিরিক্ত বিল করার মতো অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আবু তাহের বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্ল্লী বিদ্যুৎ অফিস স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত রেখেছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বরত কর্মীরা করোনার ভয়ে ঠিকমতো গ্রাহক প্রান্তে পৌঁছে রিডিং নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ বিলে কিছুটা অসামঞ্জস্য রয়েছে। কিন্তু গ্রাহক অফিসে বিলের কপি নিয়ে আসলে তা সমন্বয় বা সমাধান করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিল বেশি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেউ বেশি দিলেও গ্রাহকের নির্দিষ্ট একাউন্টে পরবর্তী বিলের সাথে তা সমন্বয় করা হচ্ছে। যাদের বিলের সমস্যা আছে তারা যেন অফিসে এসে সমাধান করে নেয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মো. আরমান হোসেন, সাহাব উদ্দিন রিংকন, মো. শরিফ, সালা উদ্দিন মানিক, মো.আকরাম হোসাইন, মো.সাজু, মো.শাকিল, মেহেদী রাকিব, নাজিমুর ফাহাদ, শিহাব উদ্দিন রুপক, বিয়াজ, শরিফসহ প্রমুখ।



ফেসবুক পেইজ