April 15, 2024, 9:59 pm

ঝঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিতে হবে

বর্তমানে বিশ্বব্যাপি করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। ০২ মে (শুক্রবার) পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৩৩ লাখ আক্রান্ত, মারা গেছে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজারের ও বেশী বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে দিন দিন আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে ১ মে পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ১৬০ জনের উপর।

আক্রান্ত ও সংক্রমণ ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে মানুষের মাঝে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতো করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় কর্মসূচির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিভাগ ঝুঁকিপূর্ন জেলা নির্ধারণ করলেও জেলার মধ্যে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ঝুঁকিপূণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।

এতে করে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার বাড়তে পারে। যেমন ঢাকায় বেশ কিছু এলাকা ঝুঁকিপূর্ন যেমন মিরপুর, টোলারবাগ, মহাখালী, যাত্রবাড়ি। তেমনি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন ও সদরের পাবর্তীনগর ইউনিয়ন এসব এলাকায় ঝুঁকিপূণ হলেও প্রশাসন কিংবা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোন প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। ফলে ওই এলাকায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার আশংকা রয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত মাইকিং করে জনসাধারন ঘর থেকে বের না হওয়া, ত্রাণ বিতরন, প্রশাসনের নজরধারী রাখা প্রয়োজন।
পাশাপাশি সামাজিক দৃরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অথচ এ ধরনের কোন উদ্যোগ করা হয়নি। এ ছাড়া সিষ্টেম জটিলতায় সংক্রণের হার আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলায় সম্ভাব্য করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হচ্ছে।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের নমুনা রেখে চট্টগ্রাম নমুনা পরীক্ষার বেশী হওয়ায় লক্ষ্মীপুর জেলার নমুনা পেন্ডিং সংখ্যা বাড়ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে ১৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ এর মধ্যে প্রতিদিনের পাঠানো নমুনা মধ্যে তারা গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র ১৯ মার্চ রির্পোট পেয়েছে এখনো ১২ দিনের রিপোর্ট পেন্ডিং। রির্পোট রেন্ডিং থাকায় যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তারা এখনো জানতে পারছেনা তাদের শরীরে করোনা আছে কি না।

রির্পোট দেরীতে আসার কারণে যাদের শরীরে করোনা সংক্রমণ রয়েছে তারা সামাজিক দৃরত্ব বজায় না রেখে আতœীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশী এমননি হাট বাজারের অবাধে চলাফেরা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যেমন রামগঞ্জ উপজেলার নারায়নগঞ্জ থেকে আসা এক ব্যাক্তি কোয়ারেন্টাইন না মেনে নিজের বাড়ি, স্ত্রী,সন্তান, পিতা মাতা এমনকি শশ্বুর বাড়িতে অবাধে চলাফেরার কারণে এখন একই পরিবারের ১১ জন করোনায় আক্রান্ত।

তেমনি লক্ষ্মীপুরের পাবর্তীনগরের এক যুবক ঢাকা থেকে এসে কোয়ারেন্টাইন না মেনে নিজের বাড়ি, স্ত্রী,সন্তান, পিতা মাতার অবাধে চলাফেরার করার কারনে এখন ওই এলাকায় একই পরিবারের ৬ জনসহ মোট ৭ করোনা আক্রান্ত।
ওই এলাকায় আরও সংক্রমণের হার বাড়তে পারে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আশংকা করছে।

অথচ এসব এলাকা সমূহের প্রতি বাড়তি কোন নজরধারী না থাকায় দিন দিন ওই সব এলাকা থেকে পুরো ইউনিয়ন পরে উপজেলায় আক্রান্তের হার বাড়তে পারে। ফলে প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ে জরুরী ভিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সমূহে বিশেষ নজরধারী রেখে সামাজিক দৃরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন না করলে পুরো লক্ষ্মীপুর জেলায় ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

উল্লেখ যে, ৩০ মার্চ পর্যন্ত জেলায় চিকিৎসক ও শিশুসহ ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১৭জন, রামগঞ্জে ১৬জন, কমলনগরে ৫ জন ও রামগতিতে ৫ জন রয়েছে। এর মধ্যে ১ম ও ২য় রোগী সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসার খবর পাওয়া গেছে।

বর্তমানে যে অবস্থা রয়েছে আক্রান্তের হার তা থেকে যাতে করে নতুন কেউ সংক্রমণ না হয় সেই লক্ষ্যে সকলের সমন্বয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবী জানাই।

পাশাপাশি আগের দিনের নমুনা পরীক্ষা পরের দিনের মধ্যে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের গৃহিত প্রদক্ষেপ গ্রহন করবে এমন প্রত্যাশা আমাদের। সকলে ভালো থাকুন ঘরে থাকুন স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দৃরত্ব বজায় রাখুন।

মো: রবিউল ইসলাম খান
গণমাধ্যম কর্মী, লক্ষ্মীপুর



ফেসবুক পেইজ