March 26, 2024, 2:07 am
ব্রেকিং :

বাড়ি থেকে বের করে দিলো স্বামী, গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর হত্যা,গ্রেফতার ২ আসামি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গৃহবধূ আকলিমা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। তাকে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৯ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নীলফামারীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২৩ আগস্ট সৈয়দপুর থানার কামারপুকুর ইউনিয়নের মৎস্য খামারের পেছনে বৈদ্যুতিক টাওয়ারের নিচে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সৈয়দপুর থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান করে পুলিশ একপর্যায়ে জানতে পারে নিহত গৃহবধূর নাম আকলিমা আক্তার। তিনি কিসামত কামারপুকুর গ্রামের মৃত আবেদ আলীর মেয়ে। আকলিমার মরদেহের সঙ্গে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় লেখা সংবলিত একটি চিরকুট পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে আকলিমার মা জামাই শরিফুল ইসলামকে সন্দেহ করে তার নামে হত্যা মামলা করেন। মরদেহের গলায় রশি ও জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করা প্রাথমিকভাবে কোনো ধারণা করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও জানান, আকলিমার স্বামী পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন এবং প্রতিদিনেই আকলিমাকে মারধর করতেন। গত ২২ আগস্ট আকলিমার স্বামী তার সন্তানদেরকে নিজের কাছে রেখে তাকে বাড়ি বের করে দেন। বাবার বাড়িতেও স্থান না পেয়ে রাতে রাস্তায় অবস্থান নেন আকলিমা। এ সময় মৎস্য খামারের কাছে কামারপুকুর এলাকার কাঙ্গালুপুর এলাকার আনারুল ইসলাম, মো. শুভ ও মো. হৃদয় আকলিমাকে খাবার ও সাহায্যের কথা বলে নিয়ে যায়। পরে তারা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে আনারুল ও শুভ মাছ ধরার বালতির সঙ্গে বাঁধা রশি দিয়ে আকলিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আনারুল তার নিজ হাতে একটি ডার্বি কোম্পানির সিগারেটের রাংতায় সুইসাইড নোট লিখে তা আকলিমার কোমরে গুঁজে দেয়। তারা হত্যাকাণ্ডটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার অপকৌশল করে।

পুলিশ সুপার জানান, মরদেহের সঙ্গে পাওয়া চিরকুটের লেখার সঙ্গে আকলিমা ও তার স্বামীর হাতের লেখার কোনো মিল পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনাস্থলে রাখালের বেশে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়ে ডার্বি সিগারেট খায় এমন প্রায় ৬০/৭০ জনকে শনাক্ত করেন। তাদের হাতের লেখার সঙ্গে চিরকুটের হাতের লেখা মেলান। ঘটনার একপর্যায়ে আনারুলের হাতের লেখার সঙ্গে চিরকুটের হাতের লেখা মিলে যায়। এরপরই গৃহবধূ আকলিমাকে নির্মমভাবে হত্যার মূল ঘটনা বেরিয়ে আসে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আসামি আনারুল ও শুভকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামী মো. হৃদয়কে ধরার জন্য অভিযান চলছে।



ফেসবুক পেইজ