April 19, 2024, 11:59 pm

ক্ষমা না চাইলে নুরকে বয়কটের ডাক সংবাদকর্মীদের

গণমাধ্যম নিয়ে কটুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক সাংবাদিকের মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান সাংবাদিকরা। অন্যথায় নুরকে বয়কটের ঘোষণা দেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণমাধ্যম যখন আপনার কোটা আন্দোলন, ভিপি নির্বাচন, নিগৃহীত হওয়ার খবরগুলো তুলে ধরে, তখন গণমাধ্যম ভালো। এখন যখন গণমাধ্যমে আপনার ধর্ষণের অভিযোগের খবরগুলো উঠে আসছে, তখন আপনি গণমাধ্যমকে বয়কট করতে চাচ্ছেন। এটা করে কী প্রমাণিত হয়? আপনি কী ছাত্রনেতা, নাকি মৌলবাদী গোষ্ঠীর অংশ?

তারা বলেন, হনুমানের লেজে আগুন দিলে যা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নুরুকে ভিপি করে সেই কাজটিই করেছেন। দেশের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলনে গণমাধ্যম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আর এখন একজন অপরাধী এসে হুট করে গণমাধ্যম বয়কট করতে চাইলে, দেশের মানুষ মেনে নেবে, ব্যাপারটা তা নয়।

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, ‘আমি এই মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে। যে গণমাধ্যম স্বাধীনতার স্বপক্ষে কাজ করে, দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে। সেই গণমাধ্যমকে নিয়ে কটুক্তি এই দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধেই কটুক্তি। নুরদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তা না হলে ডিজিটাল আইনে যার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সে কীভাবে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়। তাহলে সরকারের প্রশাসনেও নুরদের মদদদাতা রয়েছে। এদের মুখোশও উন্মোচন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের নামে আইসিটি আইনে মামলা হলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। অথচ নুরের নামে একাধিক মামলা থাকলেও তিনি এখনও কীভাবে খোলামেলাভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। অবিলম্বে নুরু যদি গণমাধ্যমের কাছে, সংবাদকর্মীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা না চান, তবে গণমাধ্যম থেকে তাকে বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ বলেন, ‘এই নুর কে? তার পরিচয় কী? আমরা যখন ডাকসু নির্বাচন কাভার করেছি, তখন আমরা তার পাশে ছিলাম। যখন তিনি ছাত্রলীগের দ্বারা নিগৃহীত ছিলেন; আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি। আর যখন তিনি ধর্ষণ মামলার আসামি সেটা প্রচার করতে গেলে গণমাধ্যম তার শত্রু। গণমাধ্যম যখন দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, নারীর অধিকার, খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলে, তখন তিনি কাদের প্রেতাত্মা সেটা স্পষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। যিনি নারীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন, তিনি কী করে ছাত্রনেতা হন। আজ থেকে সব টেলিভিশন তাকে বয়কট করলাম।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা সোমা প্রমুখ।



ফেসবুক পেইজ