April 18, 2024, 7:55 pm

রায়পুরে মাত্রাতিরক্ত জলাবদ্ধতায় কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ

মোঃ আজম:

আর মাত্র কয়েকদিন পরই নতুন ধান ঘরে তুলে নবান্নের উৎসবে মেতে ওঠার কথা ছিল লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কৃষক পরিবার গুলো,হরেক রকমের পিঠা পায়েস আর নতুন ধানের আতপ চাল দিয়ে রসের নাস্তা তৈরির পর মৌ মৌ গন্ধের মন মাতানো স্বাধ নেওয়ার যেই আকাঙ্খা এবার সবই ধূলিস্যাৎ !

পরপর টানা বর্ষণের কারণে এবার জমিতে মাত্রাতিরিক্ত জলবদ্ধতায় এবছর এখানকার কৃষকের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে । সময়মত আমন ধানের বীজ তলা তৈরিতেও ব্যাপক বাধা বিগ্নতা উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলেও বৃষ্টির কারণে আর সেগুলো শেষ রক্ষা করতে পারেনি অনেকেই। বীজ থেকে চারা বের হওয়ার পর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে সঠিক সময়ে চারা রোপন করতে পারেনি অনেকে। বিশেষ করে রায়পুর উপজেলার ৪নং সোনাপুর ইউনিয়ন,৫নং চরপাতা ইউনিয়ন,৬নং কেরোয়া ইউনিয়ন এবং ৭নং পূর্ব কাঞ্চনপুর বামনী ইউনিয়নের কৃষকরাই অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছেন।

সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপ করলে জানাযায়, এসব ইউনিয়নের খাল গুলোর বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করে রাস্তা তৈরি করে নিছ দিয়ে পানি প্রবাহের জন্য যে পাইপ ব্যাবহার করা হয়েছে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় খুবই চিকন। আবার কোথাও কোথাও পানি সরার জন্য কোন পাইপই ব্যাবহার করা হয়নি। ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় টানা বর্ষনে পানি না সরে জমিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় মারাত্নক ক্ষতি সাধিত হয়েছে কৃষকের চাষাবাদে। প্রতি বছর এ উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়,কিন্ত এবছর সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আবাদ করা হলেও প্রায় অর্ধেকাংশ চলে গেছে পানির নিছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান,এবারে করোনা ভাইরাসের পাদুর্ভাব আর অতি বর্ষণে কৃষকের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান উল্লেখ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া ও তিনি আরও বলেন উপজেলার ৪,৫,৬ এবং ৭নং ইউনিয়নে সকল প্রাকৃতিক প্রতিকুলতাকে ডিঙ্গিয়ে চাষাবাদ করা হলেও সর্বশেষ টানা বর্ষনের কারণে এসব ইউনিয়নের প্রায় ৯০ ভাগ ধানের আবাদ সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে,বাকি ১০ ভাগে যে ধান গাছ গুলো রয়েছে সেগুলো টিকে থাকার নিশ্চয়তাও খুবই কম।

৭নং বামনী ইউনিয়নের কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির জানান, প্রায় ২০ একর অনাবাদি জমিতে আমন ধানের আবাদ করার জন্য জমি প্রস্তুত করেছিলেন এমনকি বীজতলাও বানিয়ে ছিলেন,কিন্ত জলাবদ্ধতার কারণে সেই চারা আর রোপন করতে পারেননি তারা। অগত্যা কিছু চারা বিক্রি করতে পারলেও বাকি গুলো সব পানিতে পঁছে গিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে আবাদ না করা জমি গুলো এবার আবাদ করার স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে গেল।



ফেসবুক পেইজ