লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে নিহত প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচারের দাবিতে জানিয়েছে। স্বজনদের মাঝে উত্তেজনা এ ঘটনায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোনাপুর ইউপির চরবগা গ্রামের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনের স্ত্রী রিপা আক্তার (৩০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বার প্রসব বেদনা উঠে। পরে বুধবার সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালের নার্স ইয়াসমিনের করা হলুদ কার্ডের মাধ্যমে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবারের লোকজন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শামিমা ও নার্স আরজু বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রিপা আক্তার অপারেশন (সিজার) করেন। অপারেশনে ছেলে সন্তান হয়। এ সময় প্রসূতি তার বাচ্চা নিয়ে ঠিক থাকলেও বৃহস্পতিবার প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করে। সকালে স্বজনদের অনুরোধে নার্স স্যালাইন দেন। সাথে সাথে প্লোরে লুটে পড়ে মৃত্যু হয় প্রসুতির।
এ ঘটনায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শামিমা জানান, প্রসুতি কিভাবে মারা গেলে কিছুই বুঝতে পারছি না। সে জন্য আর খোঁজ নেয়া হয়নি। যিনিই ওই প্রসুতিকে দুই বাচ্চা থাকার পরও তৃতীয় বাচ্চা হওয়া সময় সরকারি হলুদ কার্ড দিয়েছেন, তিনি অন্যায় করেছেন।
নিহতের পরিবারের লোকজন কিভাবে মৃত্যু হলো, তা জানতে চাইলে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় নিহতের আত্মীয়স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। তখন বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশকে জানালে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করেন।
নিহতের সৌদি প্রবাস ফেরত স্বামী ফারুক হোসেন জানান, ‘ বুধবার এক স্বজন এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ায় সারাদিন ভালো ছিলো আমার স্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে ডাক্তার না এসে নার্সকে দিয়ে স্যালাইন দেয়ার সাথে সাথে মাঠিতে লুটে পড়ে আমার স্ত্রী মারা গেছেন। কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ ঘটনায় দোষীদের বিচার চাই।’
রায়পুর সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার জাকির হোসেন ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘রোগীর হার্ট এটাক হওয়ায় সে মারা গেছেন। ওই ডাক্তারের কোনো অবহেলা ছিল না।’
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।