লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : করোনার বিস্তার ঠেকাতে বুধবার থেকে সারাদেশের ন্যায় লক্ষ্মীপুরেও শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন। এতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লকডাউনে মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ থাকলেও নি¤œ আয়ের মানুষ অনেকে রাস্তায় নেমেছেন।
যানবাহন না থাকলেও রাস্তায় বেশকিছু রিকশা-ভ্যান ও মোটরসাইকেল চোখে পড়েছে। আবার অনেক মানুষ পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।
তবে লকডাউন মানাতে যথেষ্ট তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রমজানে কঠোর লকডাউনে বিভিন্ন অজুহাতে যেসব মানুষ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।
ফলে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন রাস্তা জনশূন্য রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও ফার্মেসী ছাড়া বাকি সবধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে বন্ধ।
বুধবার লকডাউনের প্রথম দিন ভোর থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরসহ উপজেলা শহরগুলোর গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম
এ সময় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে দোকানপাট খোলা রাখার দায়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করতে দেখা গেছে। তাছাড়া মানুষদেরকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
শহরের কয়েকটি পয়েন্টে জেলা পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। উত্তর তেমুহনী, দক্ষিণ তেমুহনী, ঝুমর সিনেমাহল এলাকা, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা পুলিশের সদস্যরা।
বিনা কারণে যেসব মানুষ যানবাহন চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের মামলা দিয়ে জরিমানা করতে দেখা গেছে। যানবাহন বন্ধ থাকায় রিকশা-ভ্যানে করে যেসব মানুষ প্রয়োজনীয় কাজে যাচ্ছে। পুলিশ তাদের থামিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন। কিন্তু সদুত্তর না পাওয়ায় অনেককেই রিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশি প্রয়োজন হলে তাদেরকে গন্তব্যে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (এনডিসি) রাসেল ইকবাল জানান, প্রয়োজন ছাড়া বাজারে ঘোরাঘুরি করার সময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ১৭ জনের কাছ থেকে ৭৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানান, দেশকে করোনার হাত থেকে রক্ষার স্বার্থে সরকারের নির্দেশে সারাদেশে লকডাউন চলছে। লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশের প্রতিটি সদস্যের মতো আমিও মাঠে রয়েছি। দেখে মনে হচ্ছে লক্ষ্মীপুরে লকডাউন সফলভাবে পালিত হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের কঠোর লকডাউন পালনকালে দায়িত্বশীল আচরণের দিকনির্দেশ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউন পালনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক লক্ষ্মীপুরে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। যে কোনোভাবেই হোক সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসন সদা সচেষ্ট রয়েছেন।
তাই সকলকে নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে লকডাউন মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।