April 27, 2024, 11:00 pm
ব্রেকিং :
ভোটের দিন কর্মীদের রোযা রাখার আহবান চেয়ারম্যান প্রার্থীর লক্ষ্মীপুরে তীব্র তাপদাহে বায়েজীদ ভূঁইয়ার উদ্যোগে পানি ও স্যালাইন বিতরণ লক্ষ্মীপুরে প্রশিক্ষণ শেষে ৪ শতাধিক হাস-মুরগীকে ভ্যাকসিন প্রদান লক্ষ্মীপুরে পোল্ট্রি ভ্যাকসিন প্রদান বিষয়ক প্রশিক্ষণ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে বায়েজীদ ভুঁইয়ার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তে শ্রদ্ধা লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের আয়োজনে ৭ মার্চ পালিত লক্ষ্মীপুর জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুরে নিবন্ধন পূর্ব অবহিতরন সভা ও প্রশিক্ষণ লক্ষ্মীপুর সদরে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় নুরনবী চৌধুরী লেখাপড়া করেই অনেক বড় হতে হবে: ঢাবি উপাচার্য

দেশকে গর্বিত করা তামিমের যত মুহূর্ত, (শুভ জন্মদিন)

আজ একত্রিশে পা রাখলেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল।


২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম খেলেছিলেন বাংলাদেশের হয়ে। তেরো বছর পর তামিম ইকবাল এখনো স্বমহিমায় উজ্জ্বল। সম্প্রতি ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হয়েছেন। দেশের ব্যাটিং অর্ডারের অন্যতম স্তম্ভ এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারজুড়ে জন্ম দিয়েছেন অসংখ্য অসাধারণ মুহূর্তের। আজ তাঁর জন্মদিন। এ উপলক্ষে তামিমের হাতে তৈরি সেই অসাধারণ সব মুহূর্তের দিকে ফিরে তাকালে কেমন হয়.

শুরুর সেই হুংকার

ভারত তো বটেই, আজ থেকে ১৩ বছর আগে ক্রিকেট–দুনিয়ারই অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার ছিলেন জহির খান। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে জহিরের সঙ্গেই একটা অসাধারণ মুহূর্ত আছে তামিম ইকবালের। বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি। আগের বলেই নাকানিচুবানি খাইয়েছেন মাত্র তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা অনভিজ্ঞ বাংলাদেশি ওপেনারকে। সে সময়ে অন্য যেকোনো ব্যাটসম্যান এমন মুহূর্তে বোলারকে সমীহ করে খেলার কথা চিন্তা করতেন। জহির খানও নিশ্চয়ই ভেবেছিলেন, তাঁকে মারার সাহস করবেন না তামিম।কিন্তু কিসের কী! পরের বলেই ডাউন দ্য উইকেটে দুই পা এগিয়ে এসে সপাটে ব্যাট চালালেন, বল সোজা গ্যালারিতে গিয়ে পড়ল। মাঠের বিশাল বড় স্ক্রিনে ধরা পড়ল হতবুদ্ধি বোলার জহির খান এবং অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়ের মুখ। তামিমের আগমনী বিজ্ঞাপনই বলা যেতে পারে সে শটটি। এই শটের মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো ক্রিকেটবিশ্ব জেনেছিল একজন ‘তামিম ইকবাল’-এর কথা, যে একটিমাত্র শটে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছিল।

লর্ডসে ‘অনার্স’ পাস
বয়স মাত্র ২১, ইংল্যান্ডে প্রথম সফর, তার ওপর সেটি ইংলিশ মৌসুমের শুরু। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবাল করলেন ১০৩। লর্ডসে কোনো বাংলাদেশির প্রথম সেঞ্চুরি। সেটিও কী দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি! ১৫ চার আর ২ ছয়ে মাঠ আলো করে মাত্র ৯৪ বলে। ১৯৯০ সালে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ৮৮ বলে সেঞ্চুরির পর লর্ডসে দ্রুততম। স্ট্রোক-ঝলমল সেই সেঞ্চুরির চেয়ে তামিমের উদযাপনটাও কম দর্শনীয় ছিল না। টিম ব্রেসনানের পরপর চার বলে ৪, ৪, ২, ৪ রান নিয়ে ৮৭ থেকে চোখের পলকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যাওয়ার পর ড্রেসিংরুমের দিকে স্প্রিন্ট দিয়ে লাফিয়ে উঠলেন শূন্যে। দৌড়ে গিয়ে একটা লাফ দিলেন। এরপর কয়েকবার জার্সির পেছন দিকে হাত দিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে দেখালেন। বোঝাতে চাইলেন, লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম তোলার পরীক্ষায় পাস তো করলাম! এবার তবে লিখে ফেলো! লর্ডসে সেঞ্চুরির পর তামিম ইকবালের রাজকীয় উদযাপন আজও ক্রিকেট রোমান্টিকদের চোখে ভাসে।

ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর…


২০১২ এশিয়া কাপে তামিমের সেই চার আঙুল দেখানো বিখ্যাত উদযাপন। যেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় গল্পগাথায় চিরদিনের জন্য জায়গা করে নিয়েছে। টানা চার ম্যাচে চার ফিফটি করার পর আঙুল গুনে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা ছিল ‘জবাব দেওয়া’র এক উদযাপন। এশিয়া কাপের আগে তামিমকে দলে রাখা হয়নি সেবার। পরে সমালোচনার মুখে শেষ মুহূর্তে দলে জায়গা পান তিনি। আর জায়গা পেয়েই দেখিয়ে দেন নিজের গুরুত্ব। আর তামিমের আগুনে পুড়ে একে একে ছারখার হয়েছিল পাকিস্তান (৮৯ বলে ৬৪ ও ৬৮ বলে ৬০), ভারত (৯৯ বলে ৭০) ও শ্রীলঙ্কা (৫৭ বলে ৫৯)। লঙ্কানদের বিপক্ষে চতুর্থ ফিফটিটি করেই গুনে গুনে গ্যালারিকে দেখিয়ে দেন চার আঙুল।

হাত ভাঙা, কিন্তু মনোবল অটুট

কে বলে সাহসী সুন্দর ব্যাটিং সব সময় চার ছক্কার ফুলঝুরিতে হয়? কখনো কখনো সাহসের সৌন্দর্য শুধু একটা বল ঠেকিয়েও হতে পারে। ২০১৮ এশিয়া কাপে ভাঙা হাত নিয়েও এক বল খেলে সাহসের দারুণ উদাহরণ গড়েছিলেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাহসী ব্যাটিংয়ের কথা বললে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিম ইকবালের ওই এক বল খেলার ছবিটিই স্মৃতিতে আসে সবার আগে। সেদিন মুশফিকুর রহিম নিজেও খেলেছিলেন ১৫০ বলে ১৪৪ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। কিন্তু সব ছাপিয়ে আলোচনায় চলে আসে তামিমের সাহসের সেই অনুপম প্রদর্শনী। প্রথমে হাতে চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে করেছিলেন ৩ বলে ২ রান। ইনিংসের শেষ দিকে আবার নামার পর একটি বলই খেলেছিলেন। ওই একটা বলেই তামিম ইকবাল উদ্ভাসিত হয়েছিলেন অন্য রকম এক আলোয়। সাহসের আলো। দলের জন্য আত্মনিবেদনের আলো। সেই আলো নিজের ব্যক্তিগত দুঃখ ভুলে গিয়ে বাকিদের জন্য প্রেরণা হয়ে ওঠার। তামিমের কারণেই যোগ হয়েছিল আরও ৩২ রান। যা শ্রীলঙ্কা-বধে রেখেছিল অনন্য ভূমিকা।



ফেসবুক পেইজ