May 13, 2024, 3:19 am
ব্রেকিং :
লক্ষ্মীপুরে দোকান বিক্রির লোভ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে খোঁড়া গর্তে পড়ে প্রাণ গেল ভাই-বোনের লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের ছাতা, স্যালাইন ও পানি বিতরণ ভোটের দিন কর্মীদের রোযা রাখার আহবান চেয়ারম্যান প্রার্থীর লক্ষ্মীপুরে তীব্র তাপদাহে বায়েজীদ ভূঁইয়ার উদ্যোগে পানি ও স্যালাইন বিতরণ লক্ষ্মীপুরে প্রশিক্ষণ শেষে ৪ শতাধিক হাস-মুরগীকে ভ্যাকসিন প্রদান লক্ষ্মীপুরে পোল্ট্রি ভ্যাকসিন প্রদান বিষয়ক প্রশিক্ষণ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে বায়েজীদ ভুঁইয়ার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তে শ্রদ্ধা লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের আয়োজনে ৭ মার্চ পালিত লক্ষ্মীপুর জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পত্রিকানিউজউইকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নিয়ে জয়ের নিবন্ধ

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাপ্তাহিক পত্রিকা নিউজউইকে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ‘বাংলাদেশ : এশিয়ার বিস্ময়কর ডিজিটাল নেতা’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধটিতে তিনি বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুরুর পর থেকে ১৩ লাখের বেশি আইটি পেশাজীবী বাংলাদেশে স্থায়ী হয়েছেন। পাশাপাশি ১০ হাজার আইটি উদ্যোক্তাও তৈরি হয়েছে।

নিবন্ধটিতে মাত্র এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশন ও এর ফলে কী সুফল পাচ্ছে এবং কিভাবে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সুবিধা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

নিচে তার নিবন্ধটি তুলে ধরা হলো:
এক দশক আগে, বাংলাদেশ ২০২১ সাল নাগাদ প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার প্রতিজ্ঞা নেয়। তখন খুব বেশি লোক এটা বিশ্বাস করতে পারেননি।

প্রকল্পটির প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-২০০৯ সালে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন মাত্র ২ কোটি বাংলাদেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। কিন্তু, এখন ১২ কোটি বাংলাদেশি মোবাইল ব্যবহার করেন। এর পাশাপাশি কয়েক লাখ বাংলাদেশির মোবাইলে উচ্চগতি-সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। তাদের অনেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা। এর ফলে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন ঘটেছে।

পরিকল্পনামাফিক শ্রমসাধ্য, কাগজ-ভিত্তিক সরকারি সেবাসমূহকে সহজে ব্যবহারযোগ্য ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন-ভিত্তিক কর্মসূচিতে রূপান্তরিত করতে ২০০৯ সালে উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। পাশাপাশি, ই-সিগনেচার ও ইলেক্ট্রনিক ফাইলিংও ব্যাপকভাবে চালু করা হয় ও এতে উৎসাহ দেয়া হয়। এতে সুফল মেলে। সরকার ৮ হাজার ৫শ’ ডিজিটাল সেন্টারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে- যা এখন মানুষকে কার্যত সব ধরনের অনলাইন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল সেন্টারগুলো মানুষকে অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম-নিবন্ধন, চাকরি ও চিকিৎসা সেবা নিতে সহায়তা করছে। এমনকি অনেক জাতীয় কর্মকাণ্ডও অনলাইনে হচ্ছে। অনলাইনে এই ডিজিটাল সেবার কারণেই মূলত গত বছর করোনাভাইরাসের সময় প্রায় নির্বিঘ্নে সরকারি সেবাসমূহ দেয়া হয়েছে।

একটি নতুন জুডিশিয়ারি পোর্টালের সহায়তায় আদালতগুলোও তাদের কার্যাবলী অব্যাহত রাখে। কৃষকরা অনলাইনে এগ্রিকালচারাল পোর্টালের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারেন। নাগরিকরা এখন সহজলভ্য মোবাইল ব্যবহার করে কোভিড-১৯ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারছেন। এখন অনলাইনে অনেক প্রোগ্রাম যুক্ত হয়েছে-যেগুলোর মাধ্যমে পাসপোর্ট থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যন্ত প্রায় সব সরকারি ফরম পূরণ করা যায়।

মোবাইল ফোনগুলো হচ্ছে এই বিস্ময়কর ঘটনার মূল চাবিকাঠি। বাংলাদেশে এখন জাতীয় জরুরি হেল্প লাইন ৯৯৯ চালু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ টোল-মুক্ত। এই সেবাটির মাধ্যমে নাগরিকরা দুর্ঘটনা, সাইবার ক্রাইম, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, অগ্নিকাণ্ড ও জরুরি চিকিৎসা সেবাসহ যেকোনো প্রয়োজনে কল করতে পারেন। জাতীয় হেল্প ডেস্ক প্রতি মিনিটে ৬০টি কলে সাড়া দিচ্ছে। জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য কৌশলের কল্যাণে টেলিমেডিসিন কেবল সম্ভবই নয়, বিশেষত সেবাদান এলাকার আওতার বাইরে প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলেও এখন বাস্তবতা। এর প্রোগ্রামগুলোর আওতায় স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মৌলিক তথ্য প্রচার করে স্বাস্থ্যকর জনসংখ্যা গড়ে তোলা হচ্ছে।

এছাড়া, সরকার আরও জবাবদিহি এবং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অনলাইন অভিযোগের প্রতিকার ব্যবস্থা বাংলাদেশিদের সহজেই সরকারি পরিষেবা বা পণ্য সম্পর্কে অনলাইনে অভিযোগ জমা দেয়ার সুযোগ করে দেয়।

ব্যাপক কানেকটিভিটি অর্থনীতিতেও সহায়তা করেছে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। একটি দক্ষ, ডিজিটালি প্রস্তুত শ্রমশক্তি বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং যা এখন বছরে ৫ লাখ স্নাতক কর্মী তৈরি করছে। কেবল গত বছরেই তাদের মধ্যে ৬৫ হাজারেরও বেশি তথ্য-প্রযুক্তি পেশাদার ছিলেন। ডিজিটাল কেন্দ্রগুলো নিজেরাই কর্ম সৃজনকারী। প্রতিটি কেন্দ্রে তিনজনের মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী মনোনীত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ২৫ বছরের কম বয়সী। বাংলাদেশ এই তরুণ ‘সাইবার শ্রমিকদের’ জন্য উর্বর স্থল। বিগত বছরগুলোতে তরুণ বাংলাদেশিদের বেশিরভাগ পরিবারের ব্যবসার বাইরে তাদের জীবন কল্পনাও করতে পারেননি। আজ তারা ক্রমবর্ধমান হারে শহুরে, ভ্রাম্যমাণ এবং নতুন অর্থনীতিতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত।

ডিজিটালাইজেশন থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সুফল পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৩ লাখের বেশি প্রযুক্তিবিদ বাংলাদেশকে তাদের আবাসস্থল করে তুলেছেন। প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা রয়েছেন। সব মিলিয়ে তারা এখন তথ্য-প্রযুক্তি পরিষেবা থেকে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন।

বাংলাদেশ আক্ষরিক অর্থেই তারকা বনে যাচ্ছে । দেশটি ২০১৮ সালে প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছে। উপগ্রহ টেলিযোগাযোগ সেবার বিন্যস্ত করে সরবরাহ আমাদের অর্থনীতিকে আরও জোরদার করে তুলেছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। আজ এটি ৮ শতাংশেরও ওপরে রয়েছে। এটা সহজেই উপলব্ধি করা যায়, উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধির কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে। তবে, সেগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে যা ইন্টারনেট যুগের দিকে দেশের নাটকীয় পদক্ষেপের চেয়ে আরও উল্লেখযোগ্য। এমন কী, আমরা আমাদের ডিজিটাল দক্ষতা রফতানি করছি। বাংলাদেশি প্রশিক্ষকরা মালদ্বীপ, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কায় আমাদের এশীয় প্রতিবেশীদের ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণে সহায়তা করছেন। এক দশক আগে কেউই এটা সম্ভব হবে বলে ভাবেননি।

সূত্র : বাসস



ফেসবুক পেইজ