দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মো. মিনহাজ (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
বীরগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াবান্দ কেরানী পাড়ার ছইদুল ইসলামের ছেলে মিনহাজ (১৫) দিনাজপুর জেলা সদরে অবস্থিত ফরিদপুর গোরস্তান মাদ্রাসা নাজেরা ক্লাসের ছাত্র। করোনার কারণে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সে বাড়িতে অবস্থান করে।
সে প্রতিবেশী আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে আরবি শিক্ষাদান করে আসছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় আরবি শিক্ষাদানকালে আবু সিদ্দিকের পরিবার মিনহাজের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ এনে মারধর শুরু করে।
এ সময় আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যায় মিনহাজ। আত্মগোপনের থাকা মিনহাজকে দুপুর ১টায় তার নানার বাড়ি নাটুয়া পাড়া এলাকা হতে ধরে আনে। পরে আবু বক্কর সিদ্দিক তার বাড়ির সামনে সুপারি গাছে বেঁধে নির্যাতন চালায়। এ সময় তাকে উদ্ধার করতে আসা পরিবারের লোকজনের ওপরও হামলা চালায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও করে তা ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয়।
পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন মিনহাজকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার আহত মিনহাজ জানায়, আফরোজা খাতুন পড়া ভুল করলে তাকে মার দেয়। পরে সে কাঁদতে কাঁদতে বিষয়টি সে তার মাকে গিয়ে বলার পর পরিবারের লোকজন এসে আমাকে মারধর শুরু করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী রমেনা বেগম জানান, আরবি পড়ার এক পর্যায়ে আমি বাড়ির বাইরে যাই। এ সময় মিনহাজ আমার মেয়ের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায়। মেয়ের চিৎকারে আমরা ছুটে আসলে সে পালিয়ে যায়। পরে তাকে আটক করে শাসন করেছি।
মিহাজের বাবা ছইদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমি বৃহস্পতিবার বীরগঞ্জ থানায় আবু বক্কর সিদ্দিক, তার স্ত্রী রমেনা বেগমসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছি।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আলন চন্দ্র রায় জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবু বক্কর (৪৫) ও আশরাফুল ইসলাম (২৫) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বীরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল মতিন প্রধান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্ত চলছে। মামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত শাস্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।